ইতিহাসের পাতায় প্রথমবারের মতো নাম লেখাল পিএসজি। চ্যাম্পিয়নস লিগ জয়ের জন্য যে অপেক্ষা, সেটি অবশেষে ১৬৮তম ম্যাচে এসে শেষ করল ফরাসি জায়ান্টরা। আর এই অভিষেক জয়ের রাতে ইন্টার মিলানকে ৫-০ গোলে উড়িয়ে দিয়ে একসঙ্গে গড়ল একাধিক রেকর্ড।
প্রথম শিরোপা, ইতিহাসের সেরা ফাইনাল জয়ঃ
ইউরোপিয়ান কাপ ও চ্যাম্পিয়নস লিগ মিলিয়ে এই প্রথমবার ট্রফি জিতল প্যারিস সাঁঁ জার্মেই। আর সেটা এমন ব্যবধানে, যা ইতিহাসে আগে কখনো দেখা যায়নি—৫-০। চ্যাম্পিয়নস লিগের কোনো ফাইনালেই এত বড় ব্যবধানে জয় পায়নি কেউ।
সবচেয়ে বেশি ম্যাচ খেলে প্রথম জয়ঃ
পিএসজি চ্যাম্পিয়নস লিগ জিতেছে ১৬৮তম ম্যাচে এসে, যা টুর্নামেন্ট ইতিহাসে শিরোপা জয়ের আগে সবচেয়ে বেশি ম্যাচ খেলার রেকর্ড।
কিশোরদের রেকর্ডঃ
দলের হয়ে গোল করেন দুই টিনএজার—মাইয়ুলু (১৯) ও দেজিরে দুয়ে (১৯)। একাধিক টিনএজারের ফাইনালে গোল করার নজির এর আগে কখনও হয়নি ইউরোপিয়ান কাপ ইতিহাসে।
ট্রেবলের মুকুটঃ
এই জয়ে ২০২৪–২৫ মৌসুমে ট্রেবল পূর্ণ করল পিএসজি—লিগ ওয়ান, ফরাসি কাপ এবং চ্যাম্পিয়নস লিগ। ইউরোপে নবম এবং ফ্রান্সের প্রথম ক্লাব হিসেবে ট্রেবল জয়ের কীর্তি গড়ল তারা। ১৯৯৩ সালে মার্সেইয়ের পর দ্বিতীয় ফরাসি ক্লাব হিসেবে ইউরোপ শ্রেষ্ঠত্বে নাম লেখাল প্যারিসিয়ানরা।
এনরিকের ডাবল ট্রেবলঃ
লুইস এনরিকে দ্বিতীয়বারের মতো ইউরোপিয়ান ক্লাবের হয়ে ট্রেবল জয় করলেন। এর আগে ২০১৪–১৫ মৌসুমে বার্সেলোনাকে একই কীর্তি এনে দিয়েছিলেন তিনি। এই তালিকায় তাঁর পাশে আছেন কেবল পেপ গার্দিওলা।
দেজিরে দুয়েরের মহারণঃ
পিএসজির তরুণ ফরোয়ার্ড দেজিরে দুয়ে ফাইনালের প্রথম তিন গোলে অবদান রেখেছেন—একটি অ্যাসিস্ট ও দুটি গোল। একই ফাইনালে এত গোলে সরাসরি অবদান রাখা প্রথম খেলোয়াড় তিনি।
হাকিমির ইতিহাসঃ
আশরাফ হাকিমি চলতি মৌসুমে ৪ গোল ও ৫ অ্যাসিস্টসহ মোট ৯ গোলে অবদান রেখেছেন, যা চ্যাম্পিয়নস লিগে কোনো ডিফেন্ডারের যৌথ সর্বোচ্চ অবদান। ২০০০–০১ মৌসুমে ইয়ান হার্টও ঠিক ৯ বার স্কোরিংয়ে ভূমিকা রেখেছিলেন। এ ছাড়া নিজের সাবেক ক্লাব ইন্টারের বিপক্ষে ইউরোপিয়ান কাপ ফাইনালে গোল করা প্রথম খেলোয়াড় এখন হাকিমি।
সবচেয়ে কম বয়সে অ্যাসিস্টঃ
দেজিরে দুয়ে ১৯ বছর ৩৬২ দিন বয়সে অ্যাসিস্ট করে ফাইনালে সবচেয়ে কম বয়সী অ্যাসিস্টকারী খেলোয়াড় হন। ভেঙেছেন রিয়ালের মিডফিল্ডার জুড বেলিংহামের রেকর্ড (২০ বছর ৩৩৮ দিন)।
ইন্টারের দুঃস্বপ্নঃ
ইন্টার মিলান চ্যাম্পিয়নস লিগ ফাইনালে ৫ গোল হজম করা প্রথম দল। সর্বশেষ এমনটি হয়েছিল ১৯৬২ সালে, তখন বেনফিকা ৫-৩ গোলে হারিয়েছিল রিয়াল মাদ্রিদকে।
৩৫ বছরের তিন সেনানীঃ
ইন্টারের শুরুর একাদশে ছিল ৩৫ বছরের বেশি বয়সী তিন ফুটবলার—গোলরক্ষক ইয়ান সোমার, ডিফেন্ডার অ্যাকারবি এবং মিডফিল্ডার মিখিতারিয়ান। চ্যাম্পিয়নস লিগ ফাইনালের ইতিহাসে এমন কিছুর নজির এটিই প্রথম।
এই ঐতিহাসিক রাত কেবল পিএসজির জন্য নয়, চ্যাম্পিয়নস লিগ ইতিহাসের জন্যও স্মরণীয় হয়ে থাকবে।